Hero XTM 440 (একজন বীরের গর্জন)

Hero Xtm 440 : বাতাসে একটা উত্তেজনা, রাস্তায় একটা কম্পন। আসছে এক দানব, এক ইস্পাতের ঘোড়া, যার গর্জন ভারতে কখনো শোনা যায়নি। হ্যাঁ, আমরা বলছি হার্লি-ডেভিডসন Hero XTM 440-এর, রাস্তার রাজার, যার আগমনে ভারতের বাইকার জগতে ঝড় উঠেছে।এই বাইক শুধু একটা যন্ত্র নয়, এ একটা শিল্পকর্ম, গতির এক কবিতা। ৪৪০সিসি ইঞ্জিনের তুমুল গর্জন আর নিখুঁত হ্যান্ডলিং আপনাকে নিয়ে যাবে এক অন্য মাত্রায়, যেখানে শুধুই থ্রিল আর অ্যাড্রেনালিনের ঝড়। এক্সটিএম৪৪০ শুধু রাস্তা পার করে না, সে রাস্তা জয় করে, আপনাকে রূপান্তর করে এক ভয়ঙ্কর যোদ্ধায়, যে নির্ভয়ে যে কোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে পারে।

বাইক প্রেমীদের হৃদয় কাঁপাতে, আর রাইডারদের মন জয় করতে আবারও হার্লি-ডেভিডসন এই ঐতিহ্যবাহী মোটরসাইকেল নির্মাতা কোম্পানি এবার এনেছে তাদের নতুন অলৌকিক মেশিন, এক্সটিএম৪৪০। অফ-রোড অ্যাডভেঞ্চারের ডাকে সাড়া দিতে তৈরি এই দানবটি রাস্তার ধারণাই পাল্টে দিতে চলেছেএবং হতে চলেছে রাস্তার একমাত্র রাজা!

Hero XTM 440
_ Hero XTM 440

Hero XTM 440 এর ইঞ্জিন (উন্মত্ত ঘোড়া)

XTM 440-এর শক্তির কেন্দ্রবিন্দু হলো তার ৪৪০সিসি, লি কোয়েড ইঞ্জিন। এই ইঞ্জিনটা যেন একটা ঘুমন্ত শের, যা একবার জেগে উঠলে আর থামে না। ৬৪ অশ্বশক্তি আর ৮.২ এনএম টর্কের অগ্নিকুণ্ড আপনাকে যে কোনো রাস্তায় ধুলোময় করে দিতে পারে। কিন্তু শুধু শক্তি নয়, এই ইঞ্জিন একটা নিখুঁত শিল্পকর্ম।রাস্তায় বাতাস কেটে চলা, শক্তির এক ঝলকানি অনুভব করার এক অনন্য উপায়।

ইঞ্জিনের ধরন: ৪৪০সিসি, লি কোয়েড, সিঙ্গেল-সিলিন্ডার ইঞ্জিনটি সহজেই গতি তুলতে এবং মেইনটেন করতে সুবিধাজনক। লি কোয়েড ডিজাইন আর লাইটওয়েট কনস্ট্রাকশানের ফলে ইঞ্জিনটা খুবই সাশ্রয়ী ও ইফিশিয়েন্ট।

পাওয়ার ডেলিভারি: ইঞ্জিনটি নিম্ন RPM থেকেই উচ্চ টর্ক দেয়, অর্থাৎ আপনি যে কোনো গিয়ারে, যে কোনো গতিতে ঝটপট অ্যাক্সিলেশন পাবেন। হাইওয়েতে ক্রুজিংয়ের জন্যও ইঞ্জিনটি খুবই মসৃণ ও নিরব।

কুলিং সিস্টেম: লাইকুইড-কুলড সিস্টেমটি ইঞ্জিনকে সবসময় শীতল রাখে, যে কোনো পরিবেশে সর্বাধিক পারফর্মেন্স নিশ্চিত করে।

গিয়ারবক্স: ৫-স্পিড গিয়ারবক্সটি সঠিকভাবে রেসপন্স করে, গিয়ার পরিবর্তন মসৃণ ও নির্ভরযোগ্য করে তোলে।

সাউন্ড: এক্সটিএম৪৪০-এর এক্সহস্ট নোট একটি আলাদা গল্প বলে। একদিকে এটি গভীর, শক্তিশালী গর্জন, অন্যদিকে চলমান গতির মৃদু সুর। এই সাউন্ড আপনাকে প্রতিবার রাইডের সময় মুগ্ধ করবে।

Xtm 400 Engine
_ Xtm 400 Engine

Hero XTM 440 ডিজাইন

রঙের জাদু: XTM 440 তিনটি রঙে পাওয়া যায়: ম্যাট কালো, গাঢ় সবুজ, আর ঝলমলে লাল। এই প্রতিটি রঙই বাইকের ডিজাইনকে আরও উজ্জ্বল করে তোলে। ম্যাট কালো দেয় এক রহস্যময় চেহারা, গাঢ় সবুজ যেন জঙ্গলের রাজার গর্জন, আর লাল রঙের ঝলকানি আপনাকে অন্য সবার থেকে আলাদা করে।

দৃষ্টি আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু: XTM 440-এর লম্বা, নিচু হ্যান্ডেলবার আপনাকে দেবে এক আগ্রাসী পোশ্চার। ট্যাংকের উপর উঁচু হয়ে থাকা সিট চালককে রাজার মতো অবস্থানে রাখে। পিছনের চাকাটা যেন রাস্তায় কামড়ে ধরেছে, যা বুঝিয়ে দেয় এই বাইকের গতি ও শক্তি।

Xtm 400 Design
_ Xtm 400 Head Light

ডিটেলে সূক্ষ্মতা: XTM 440-এর ডিজাইনে কোনো কিছুই অবহেলা করা হয়নি। সুন্দরভাবে ক্রোম করা এক্সহস্ট পাইপ, লেদারের সিটের সূক্ষ্ম সেলাই, আর গ্রিপগুলোর আরামদায়ক ডিজাইন – সবকিছুই মিলেমিশে তৈরি করেছে এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা।

আলোর খেলা: সামনের বড় হেডল্যাম্প রাতেও রাস্তাকে উজ্জ্বল করে তোলে। দুই পাশে থাকা এলইডি ইন্ডিকেটর গাড়ির মুখারে যোগ করে এক ভয়ঙ্কর চেহারা। আর পিছনের টেল লাইটের লাল আভা রাস্তায় একটা উত্তেজনা ছড়িয়ে দেয়।

Xtm 400 Head Light
_ Xtm 400 Head Light

The Harley-Davidson XTM440-এর ব্রেকিং সিস্টেম

হার্লি-ডেভিডসন এক্সটিএম৪৪০-এর ব্রেকিং সিস্টেম অত্যন্ত উন্নত। এতে ডুয়াল চ্যানেল এবিএস সিস্টেম আছে, যা যে কোনো গতিতে নিরাপদ ব্রেকিং নিশ্চিত করে। এছাড়াও আছে ফ্রন্ট ও রিয়ার ডিস্ক ব্রেক, যা অতিরিক্ত শক্তি প্রদান করে।

ফ্রন্ট ব্রেক: এক্সটিএম৪৪০-এর ফ্রন্ট ব্রেকটা ২৯২ মিমি-এর ব্লেড ডিস্ক ব্রেক। এটি ডুয়াল পিস্টন ক্যালিপারের সাথে যুক্ত। এই ব্রেকটা অত্যন্ত শক্তিশালী, যা যে কোনো গতিতে দ্রুত ও নিরাপদ ব্রেকিং নিশ্চিত করে।

রিয়ার ব্রেক: এক্সটিএম৪৪০-এর রিয়ার ব্রেকটা ২৪৫ মিমি-এর ব্লেড ডিস্ক ব্রেক। এটি সিঙ্গেল পিস্টন ক্যালিপারের সাথে যুক্ত। এই ব্রেকটাও অত্যন্ত শক্তিশালী, যা পিছনের চাকাকে দ্রুত থামাতে সাহায্য করে।

এবিএস সিস্টেম: এবিএস সিস্টেমটা ব্রেকিংয়ের সময় চাকার লক রোধ করে। এতে বাইক নিয়ন্ত্রণে থাকা সহজ হয়, বিশেষ করে ভেজা বা পিচ্ছিল রাস্তায়।

X 440 image

Hero XTM 440 ফিচার

ইঞ্জিন আর পারফর্মেন্স:

  • ৪৪০সিসি, লি কোয়েড ইঞ্জিন ৬৪ অশ্বশক্তি আর ৮.২ এনএম টর্কের জ্বালা জমায়। অর্থাৎ, রাস্তায় বজ্রপাত!
  • ৫-স্পিড গিয়ারবক্সের সাথে মিলে মসৃণ আর আনন্দদায়ক রাইডিং অভিজ্ঞতা দেয়।
  • ইঞ্জিনের সাথে সাথে আধুনিক ফুয়েল ইঞ্জেকশন সিস্টেম ইঞ্জিনের পারফর্মেন্স আর মাইলেজ দুটোই বাড়িয়ে দেয়।

সাসপেনশন আর হ্যান্ডলিং:

  • টেলিস্কোপিক ফ্রন্ট ফর্কস আর মনোশক রিয়ার সাসপেনশন যে কোনো রাস্তার অসমানতাকে মোকাবেলা করতে পারে। ফলে রাইডটা আরামদায়ক ও নিরাপদ।
  • লম্বা হ্যান্ডেলবার বাইকটিকে সহজেই কন্ট্রোল করতে সাহায্য করে, যে কোনো মোড়ে ঝুঁকে পড়া যায়।
  • নিখুঁত হ্যান্ডলিংয়ের জন্য ব্রড টায়ার ব্যবহার করা হয়েছে, যা গ্রিপ আর স্থিতিশীলতা বাড়িয়ে দেয়।

ব্রেকিং সিস্টেম:

  • নিরাপত্তার চিন্তা করেই ডুয়াল চ্যানেল এবিএস সিস্টেম দেয়া হয়েছে, যা যে কোনো গতিতে নিরাপদ ব্রেকিং নিশ্চিত করে।
  • ফ্রন্ট ও রিয়ার ডিস্ক ব্রেকের শক্তিশালী কামড় বাইককে যে কোনো পরিস্থিতিতে থামিয়ে দেয়।
X 440 back side

টেকনোলজি:

  • ৪.3 ইঞ্চির ডিজিটাল ইন্সট্রুমেন্ট ক্লাস্টার থেকে স্পিড, রেভ, ফুয়েল লেভেল, ট্রিপ মিটার সহজেই দেখা যায়।
  • ব্লুটুথ কানেকশনের মাধ্যমে রাইডের সময় ফোন কল ও মিউজিক উপভোগ করা যায়।
  • ইউএসবি চার্জিং পোর্ট দিয়ে ফোন চার্জ রাখা যায়।

কমফোর্ট:

  • লম্বা আর আরামদায়ক সিট লম্বা রাইডের জন্যও উপযুক্ত।
  • হিটেড গ্রিপস শীতের সময় হাত ঠান্ডা হতে দেয় না।
  • ফুটপেগগুলো অ্যাডজাস্টেবল, যাতে নিজের আরামের মতো সেট করা যায়।
  • উইন্ডশিল্ড বাতাসের চাপ কমিয়ে আরামদায়ক রাইড অভিজ্ঞতা দেয়।
X 440

অতিরিক্ত ফিচার:

  • ক্রুজ কন্ট্রোল রাস্তায় একই গতিতে চলতে সাহায্য করে।
  • ট্র্যাকশন কন্ট্রোল স্লিপারি রাস্তায় নিরাপদ রাইডিং নিশ্চিত করে।
  • এন্টি-থেফ্ট সিস্টেম বাইকটিকে চুরির হাত থেকে রক্ষা করে।

Hero XTM 440 মূল্য

গাড়িটিকে তিনটি ভেরিয়েন্ট এ দেখা যায়। যার এক্স শোরুম মূল্য ২.৩৯ লাখ টাকা থেকে ২.৮০ লাখ টাকা। এই গাড়িটিকে আপনি কিনতে চাইলেন অনলাইনে মাধ্যমে অগ্রিম বুক করতে পারেন।